০৩:১৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ডুমুরিয়ায় একদিনে ১৭ জন নৌযান মালিককে আর্টিসানাল ফিশিং ট্রলারের অনুমতিপত্র প্রদান, দ্রুত সেবার দৃষ্টান্ত

Reporter Name
  • Update Time : ০৮:০৮:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / ৩৪ Time View

ডুমুরিয়ায় একদিনে ১৭ জন নৌযান মালিককে আর্টিসানাল ফিশিং ট্রলারের অনুমতিপত্র প্রদান, দ্রুত সেবার দৃষ্টান্ত
শেখ মাহতাব হোসেন ডুমুরিয়া খুলনা
খুলনার ডুমুরিয়ায় একদিনে মোট ১৭ জন নৌযান মালিককে আর্টিসানাল ফিশিং ট্রলারের অনুমতিপত্র প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন—
শরাফপুর ইউনিয়নের তৈয়বপুর গ্রামের স্বপন কুমার বিশ্বাস, রতন কুমার বিশ্বাস, সদানন্দ বিশ্বাস, বরুন বিশ্বাস, তপন বিশ্বাস, বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাস, সন্তোস বিশ্বাস ও স্বপন বিশ্বাস;
শোভনা ইউনিয়নের চিংড়া গ্রামের আনন্দ বিশ্বাস ও অধীবাস কুমার সরকার;
সাহস ইউনিয়নের মুকুল লস্কর ও প্রদীপ দাস;
আটলিয়া ইউনিয়নের চুকনগর গ্রামের উত্তম বিশ্বাস, গৌতম বিশ্বাস ও স্বরজিৎ বিশ্বাস এবং আটলিয়া ইউনিয়নের মঠবাড়িয়া গ্রামের দীপংকর সরকার।

সামুদ্রিক মৎস্য (Marine Fisheries) আইন, ২০১০ এর ধারা ২১ এবং সামুদ্রিক মৎস্য বিধিমালা, ২০২৩ এর বিধি ১৬ অনুযায়ী উপকূলীয় মৎস্য আহরণে নিয়োজিত আর্টিসানাল নৌযানের অনুমতিপত্র প্রদানের ক্ষমতা সরাসরি সংশ্লিষ্ট মৎস্য দপ্তরকে অর্পিত হয়েছে।

বর্তমানে সামুদ্রিক মৎস্য আহরণের শতকরা প্রায় ২০ ভাগ আসে বাণিজ্যিক ট্রলার থেকে এবং বাকি ৮০ ভাগ আসে যান্ত্রিক ও আর্টিসানাল নৌযানের মাধ্যমে। দেশে প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী এসব আর্টিসানাল নৌযানের মাধ্যমে সরাসরি জীবিকা নির্বাহ করেন। তাঁদের ওপর নির্ভরশীল পরিবারের সংখ্যা এক কোটিরও বেশি। বিশ্বব্যাপী ক্ষুদ্র মৎস্যজীবীদের অধিকার সংরক্ষণ আজ আলোচিত বিষয়, যা জাতিসংঘের দায়িত্বশীল মৎস্য আহরণ আচরণবিধি (CCRF) ও টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট (SDG)-এর সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ।

মৎস্য অধিদপ্তরের ফ্রেম সার্ভে অনুযায়ী দেশে মোট ২৯,৮৬১টি আর্টিসানাল নৌযান তালিকাভুক্ত রয়েছে। তবে বাস্তবে উপকূলীয় মৎস্য আহরণে নিয়োজিত অধিকাংশ নৌযানই এখনো নিয়ন্ত্রণের বাইরে। মাছের মজুদ রক্ষা ও টেকসই আহরণ নিশ্চিত করতে সকল আর্টিসানাল নৌযানকে অনুমতিপত্রের আওতায় আনা জরুরি।

এ উদ্যোগের উদ্দেশ্য হলো উপকূলীয় ও সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ করা এবং সম্পদের টেকসই আহরণ ও উৎপাদন বৃদ্ধি নিশ্চিত করা। একই সঙ্গে দায়িত্বশীল মৎস্য আহরণ পদ্ধতি প্রবর্তনের মাধ্যমে আর্টিসানাল নৌযান ও এর কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি (MCS) করা হবে। এছাড়া অবৈধ, অনুল্লিখিত ও অনিয়ন্ত্রিত (IUU) মৎস্য আহরণ প্রতিরোধ, দায়িত্বশীল মৎস্য আহরণের আচরণবিধি (CCRF) অনুসরণ নিশ্চিতকরণ, সামুদ্রিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং জাতীয় মৎস্য নৌযান (আর্টিসানাল) রেজিস্টার তৈরি ও তথ্য হালনাগাদকরণও এই কর্মসূচির অন্যতম লক্ষ্য।

আটলিয়া ইউনিয়নের নৌযান মালিক উত্তম বিশ্বাস বলেন,
“কোন প্রকার হয়রানি ছাড়া আমরা অনুমতিপত্র নিতে পেরেছি। সরকারি ফি ছাড়া অন্য কোন টাকা-পয়সা দিতে হয়নি। অফিসের আন্তরিকতার কারণে মাত্র তিন কর্মদিবসেই আমরা এই অনুমতিপত্র পেয়েছি।”

শোভনা ইউনিয়নের অধীবাস কুমার সরকার বলেন,
“অফিসের আন্তরিক ব্যবস্থাপনায় আমরা কোনো হয়রানি ছাড়াই অনুমতিপত্র সংগ্রহ করতে পেরেছি। স্বল্প সময়ে কাজ শেষ হওয়ায় আমাদের মতো ক্ষুদ্র নৌযান মালিকদের অনেক সুবিধা হয়েছে। সরকারি সেবার প্রতি আমাদের আস্থা আরও বেড়ে গেছে।”

এ বিষয়ে মেরিন ফিশারিজ অফিসার মোঃ তরিকুল ইসলাম জানান,
“সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা স্যারের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা নৌযান মালিকদের খুব সহজে অনুমতিপত্র প্রদান করছি।”

এ বিষয়ে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সোহেল মোঃ জিল্লুর রহমান রিগান বলেন,
“আমরা দ্রুততম সময়ে সমুদ্রগামী নৌযান মালিকদের আর্টিসানাল নৌযানের অনুমতিপত্র করে দিচ্ছি। কোন ধরনের ঝামেলা বা হয়রানি ছাড়াই তাঁরা এই অনুমতিপত্র পাচ্ছেন। ডুমুরিয়া মৎস্য বিভাগ সবসময় মৎস্যজীবীদের কল্যাণে কাজ করছে এবং ভবিষ্যতেও বিপদে-আপদে তাঁদের পাশে থাকবে। এক্ষেত্রে আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়ের নিকট থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা এবং জেলা মৎস্য কর্মকর্তা স্যার ও পরিচালক স্যারের দপ্তর থেকে সবসময় প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা পাচ্ছি।

শেখ মাহতাব হোসেন।
ডুমুরিয়া খুলনা।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

ডুমুরিয়ায় একদিনে ১৭ জন নৌযান মালিককে আর্টিসানাল ফিশিং ট্রলারের অনুমতিপত্র প্রদান, দ্রুত সেবার দৃষ্টান্ত

Update Time : ০৮:০৮:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ডুমুরিয়ায় একদিনে ১৭ জন নৌযান মালিককে আর্টিসানাল ফিশিং ট্রলারের অনুমতিপত্র প্রদান, দ্রুত সেবার দৃষ্টান্ত
শেখ মাহতাব হোসেন ডুমুরিয়া খুলনা
খুলনার ডুমুরিয়ায় একদিনে মোট ১৭ জন নৌযান মালিককে আর্টিসানাল ফিশিং ট্রলারের অনুমতিপত্র প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন—
শরাফপুর ইউনিয়নের তৈয়বপুর গ্রামের স্বপন কুমার বিশ্বাস, রতন কুমার বিশ্বাস, সদানন্দ বিশ্বাস, বরুন বিশ্বাস, তপন বিশ্বাস, বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাস, সন্তোস বিশ্বাস ও স্বপন বিশ্বাস;
শোভনা ইউনিয়নের চিংড়া গ্রামের আনন্দ বিশ্বাস ও অধীবাস কুমার সরকার;
সাহস ইউনিয়নের মুকুল লস্কর ও প্রদীপ দাস;
আটলিয়া ইউনিয়নের চুকনগর গ্রামের উত্তম বিশ্বাস, গৌতম বিশ্বাস ও স্বরজিৎ বিশ্বাস এবং আটলিয়া ইউনিয়নের মঠবাড়িয়া গ্রামের দীপংকর সরকার।

সামুদ্রিক মৎস্য (Marine Fisheries) আইন, ২০১০ এর ধারা ২১ এবং সামুদ্রিক মৎস্য বিধিমালা, ২০২৩ এর বিধি ১৬ অনুযায়ী উপকূলীয় মৎস্য আহরণে নিয়োজিত আর্টিসানাল নৌযানের অনুমতিপত্র প্রদানের ক্ষমতা সরাসরি সংশ্লিষ্ট মৎস্য দপ্তরকে অর্পিত হয়েছে।

বর্তমানে সামুদ্রিক মৎস্য আহরণের শতকরা প্রায় ২০ ভাগ আসে বাণিজ্যিক ট্রলার থেকে এবং বাকি ৮০ ভাগ আসে যান্ত্রিক ও আর্টিসানাল নৌযানের মাধ্যমে। দেশে প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী এসব আর্টিসানাল নৌযানের মাধ্যমে সরাসরি জীবিকা নির্বাহ করেন। তাঁদের ওপর নির্ভরশীল পরিবারের সংখ্যা এক কোটিরও বেশি। বিশ্বব্যাপী ক্ষুদ্র মৎস্যজীবীদের অধিকার সংরক্ষণ আজ আলোচিত বিষয়, যা জাতিসংঘের দায়িত্বশীল মৎস্য আহরণ আচরণবিধি (CCRF) ও টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট (SDG)-এর সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ।

মৎস্য অধিদপ্তরের ফ্রেম সার্ভে অনুযায়ী দেশে মোট ২৯,৮৬১টি আর্টিসানাল নৌযান তালিকাভুক্ত রয়েছে। তবে বাস্তবে উপকূলীয় মৎস্য আহরণে নিয়োজিত অধিকাংশ নৌযানই এখনো নিয়ন্ত্রণের বাইরে। মাছের মজুদ রক্ষা ও টেকসই আহরণ নিশ্চিত করতে সকল আর্টিসানাল নৌযানকে অনুমতিপত্রের আওতায় আনা জরুরি।

এ উদ্যোগের উদ্দেশ্য হলো উপকূলীয় ও সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ করা এবং সম্পদের টেকসই আহরণ ও উৎপাদন বৃদ্ধি নিশ্চিত করা। একই সঙ্গে দায়িত্বশীল মৎস্য আহরণ পদ্ধতি প্রবর্তনের মাধ্যমে আর্টিসানাল নৌযান ও এর কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি (MCS) করা হবে। এছাড়া অবৈধ, অনুল্লিখিত ও অনিয়ন্ত্রিত (IUU) মৎস্য আহরণ প্রতিরোধ, দায়িত্বশীল মৎস্য আহরণের আচরণবিধি (CCRF) অনুসরণ নিশ্চিতকরণ, সামুদ্রিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং জাতীয় মৎস্য নৌযান (আর্টিসানাল) রেজিস্টার তৈরি ও তথ্য হালনাগাদকরণও এই কর্মসূচির অন্যতম লক্ষ্য।

আটলিয়া ইউনিয়নের নৌযান মালিক উত্তম বিশ্বাস বলেন,
“কোন প্রকার হয়রানি ছাড়া আমরা অনুমতিপত্র নিতে পেরেছি। সরকারি ফি ছাড়া অন্য কোন টাকা-পয়সা দিতে হয়নি। অফিসের আন্তরিকতার কারণে মাত্র তিন কর্মদিবসেই আমরা এই অনুমতিপত্র পেয়েছি।”

শোভনা ইউনিয়নের অধীবাস কুমার সরকার বলেন,
“অফিসের আন্তরিক ব্যবস্থাপনায় আমরা কোনো হয়রানি ছাড়াই অনুমতিপত্র সংগ্রহ করতে পেরেছি। স্বল্প সময়ে কাজ শেষ হওয়ায় আমাদের মতো ক্ষুদ্র নৌযান মালিকদের অনেক সুবিধা হয়েছে। সরকারি সেবার প্রতি আমাদের আস্থা আরও বেড়ে গেছে।”

এ বিষয়ে মেরিন ফিশারিজ অফিসার মোঃ তরিকুল ইসলাম জানান,
“সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা স্যারের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা নৌযান মালিকদের খুব সহজে অনুমতিপত্র প্রদান করছি।”

এ বিষয়ে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সোহেল মোঃ জিল্লুর রহমান রিগান বলেন,
“আমরা দ্রুততম সময়ে সমুদ্রগামী নৌযান মালিকদের আর্টিসানাল নৌযানের অনুমতিপত্র করে দিচ্ছি। কোন ধরনের ঝামেলা বা হয়রানি ছাড়াই তাঁরা এই অনুমতিপত্র পাচ্ছেন। ডুমুরিয়া মৎস্য বিভাগ সবসময় মৎস্যজীবীদের কল্যাণে কাজ করছে এবং ভবিষ্যতেও বিপদে-আপদে তাঁদের পাশে থাকবে। এক্ষেত্রে আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়ের নিকট থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা এবং জেলা মৎস্য কর্মকর্তা স্যার ও পরিচালক স্যারের দপ্তর থেকে সবসময় প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা পাচ্ছি।

শেখ মাহতাব হোসেন।
ডুমুরিয়া খুলনা।