১১:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ১৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভূরুঙ্গামারীর হাসপাতালে বহিরাগতদের আনাগোনা ও অনিয়ম ঢাকতে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট মানববন্ধন

Reporter Name
  • Update Time : ১২:২৪:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫
  • / ১৪ Time View

ভূরুঙ্গামারীর হাসপাতালে বহিরাগতদের আনাগোনা ও অনিয়ম ঢাকতে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট মানববন্ধন

মোঃ রফিকুল ইসলাম,
ভূরুঙ্গামারী ( কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে হাসপাতালের অনিয়ম-দুর্নীতি প্রকাশের জেরে সাহসী সাংবাদিক মোঃ মাইদুল ইসলাম–এর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে হাসপাতালের একজন স্টাফসহ বেশ কয়েকজন বহিরাগত অংশ নেন। ঘটনাটি প্রকাশ পেলে স্থানীয় সচেতন নাগরিক ও সাংবাদিক সমাজ তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

সাংবাদিক মোঃ মাইদুল ইসলাম ‘তালাশ বিডি’ ও ‘উলিপুর ডট কম’-এর ভূরুঙ্গামারী উপজেলা প্রতিনিধি। তিনি সম্প্রতি ভূরুঙ্গামারী হাসপাতালে অনিয়ম, রোগীভোগ ও দালালচক্রের কর্মকাণ্ডের বাস্তব চিত্র সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হন। ঘটনার পর তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ও অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। এরপরই তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু হয় এবং ২৯ অক্টোবর (বুধবার) সকালে হাসপাতাল পাড়া এলাকায় একটি ‘ভুয়া মানববন্ধন’ আয়োজন করা হয়।

স্থানীয় সূত্র জানায়, এই মানববন্ধনের নেতৃত্ব দেন হাসপাতালের পরিসংখ্যানবিদ আপেল। তাঁর সহযোগী সেলিম, জাকির ও মেহেদীসহ আরও কয়েকজন বহিরাগত ব্যক্তি এতে অংশ নেন।
ব্যানারে সাংবাদিক মাইদুল ইসলামকে “ভুয়া সাংবাদিক”, “চাঁদাবাজ” ও “তথ্য সন্ত্রাসী” হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। মানববন্ধনে আপেল নিজে বক্তব্য দেন এবং বহিরাগত দুই ব্যক্তি শরিফুল ও খোকনও বক্তৃতা করেন। একপর্যায়ে তারা মিছিল বের করে সাংবাদিক মাইদুলকে ‘চামড়া তুলে দেওয়ার’ হুমকি দেয়—যা এলাকাজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে।

সাংবাদিক মোঃ মাইদুল ইসলাম বলেন, “আমি কোনো চাঁদা দাবি করিনি বা কোনো বেআইনি কাজ করিনি। বরং যারা হাসপাতালে রোগীদের শোষণ করে, তাদের বিরুদ্ধে লিখেছি বলেই তারা এখন আমাকে টার্গেট করেছে। আমি প্রশাসনের কাছে ন্যায়বিচার ও সাংবাদিক নিরাপত্তা চাই।”

স্থানীয় সচেতন নাগরিকদের মতে, এই মানববন্ধন ছিল হাসপাতালের অনিয়ম-দুর্নীতি ঢাকতে একটি পরিকল্পিত নাটক। সিনিয়র সাংবাদিক বলেন, “মাইদুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে নির্ভয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করছেন। তার প্রতিবেদন অনেক প্রভাবশালী গোষ্ঠীকে অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে। এখন সেই গোষ্ঠী মিথ্যা ব্যানার টানিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে।”

মানববন্ধনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বহুজন মন্তব্য করেন যে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া অধিকাংশই হাসপাতালের প্রকৃত কর্মচারী নন; বরং দালালচক্রের সদস্য। এসব বিষয়ে আমিনুর, কুদ্দুছ , মাজহারুল আলম, বাধন, জাহাঙ্গীর আলম, আল আমিন, মিলন, হাফিজুর, রহিম, রিয়াদ, মনিরুজ্জামান, খোকন, আলাল, হিমেল, জবান, আক্তারুজ্জামান, সোহেল রানা, সুলতান, রিয়াদ, রিয়াজুল, নুরুজ্জামান, নজরুল, নাজমুল , জাকির, জিয়াউর , আশরাফুল, মিলন, আব্দুল্লাহ সহ আরো অনেকে মানববন্ধনকরীদের বিরুদ্ধে কমেন্ট করে প্রতিবাদ জানিয়েছে।

তারা জানান, “এরা সিন্ডিকেট করে হাসপাতাল চালাতে চায়। ঔষধ কোম্পানির দালাল হয়ে মানববন্ধন করে—এদের মানসিক হাসপাতালে পাঠানো উচিত।” “সত্য ও ন্যায়ের পথে থাকলে ভয় নেই; মিথ্যা অপপ্রচার কখনো সফল হবে না।”

“যেখানে অন্যায়-অবিচার, সেখানেই মাইদুল ভাইয়ের প্রতিবাদ। এমন সাহসী সাংবাদিকের প্রয়োজন সমাজে।”

“সত্যের পথে থাকলে শত্রু থাকবে। যারা আন্দোলন করছে, তাদের অনেকেই রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী দলের সঙ্গে যুক্ত।”
“মাইদুল ভাই, প্রমাণসহ ভিডিওগুলো স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও টিভি চ্যানেলে পাঠান—তাহলে দালালদের মুখোশ উন্মোচন হবে।”

সচেতন মহল দাবি করেছে, হাসপাতাল একটি চিকিৎসা সেবা প্রদানের জায়গা। এখানে সকল প্রকার মানুষ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক। সরকারি হাসপাতালের অনিয়ম, দুর্নীতি ও দালালচক্র নির্মূলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হোক। সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক, যাতে তারা নির্ভয়ে জনস্বার্থে কাজ করতে পারেন।

ভূরুঙ্গামারী হাসপাতালের এই ঘটনাটি প্রমাণ করে—অনিয়মের বিরুদ্ধে কলম ধরলে কত সহজেই মিথ্যা প্রচারণার শিকার হতে হয়। স্থানীয় সাংবাদিক সমাজ বলছে, এটি কেবল একজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র নয়, বরং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও জনগণের জানার অধিকারের ওপর সরাসরি আঘাত। প্রশাসনের উচিত দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করা এবং সত্যের পক্ষে কাজ করা সাংবাদিকদের পাশে দাঁড়ানো।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

ভূরুঙ্গামারীর হাসপাতালে বহিরাগতদের আনাগোনা ও অনিয়ম ঢাকতে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট মানববন্ধন

Update Time : ১২:২৪:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫

ভূরুঙ্গামারীর হাসপাতালে বহিরাগতদের আনাগোনা ও অনিয়ম ঢাকতে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট মানববন্ধন

মোঃ রফিকুল ইসলাম,
ভূরুঙ্গামারী ( কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে হাসপাতালের অনিয়ম-দুর্নীতি প্রকাশের জেরে সাহসী সাংবাদিক মোঃ মাইদুল ইসলাম–এর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে হাসপাতালের একজন স্টাফসহ বেশ কয়েকজন বহিরাগত অংশ নেন। ঘটনাটি প্রকাশ পেলে স্থানীয় সচেতন নাগরিক ও সাংবাদিক সমাজ তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

সাংবাদিক মোঃ মাইদুল ইসলাম ‘তালাশ বিডি’ ও ‘উলিপুর ডট কম’-এর ভূরুঙ্গামারী উপজেলা প্রতিনিধি। তিনি সম্প্রতি ভূরুঙ্গামারী হাসপাতালে অনিয়ম, রোগীভোগ ও দালালচক্রের কর্মকাণ্ডের বাস্তব চিত্র সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হন। ঘটনার পর তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ও অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। এরপরই তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু হয় এবং ২৯ অক্টোবর (বুধবার) সকালে হাসপাতাল পাড়া এলাকায় একটি ‘ভুয়া মানববন্ধন’ আয়োজন করা হয়।

স্থানীয় সূত্র জানায়, এই মানববন্ধনের নেতৃত্ব দেন হাসপাতালের পরিসংখ্যানবিদ আপেল। তাঁর সহযোগী সেলিম, জাকির ও মেহেদীসহ আরও কয়েকজন বহিরাগত ব্যক্তি এতে অংশ নেন।
ব্যানারে সাংবাদিক মাইদুল ইসলামকে “ভুয়া সাংবাদিক”, “চাঁদাবাজ” ও “তথ্য সন্ত্রাসী” হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। মানববন্ধনে আপেল নিজে বক্তব্য দেন এবং বহিরাগত দুই ব্যক্তি শরিফুল ও খোকনও বক্তৃতা করেন। একপর্যায়ে তারা মিছিল বের করে সাংবাদিক মাইদুলকে ‘চামড়া তুলে দেওয়ার’ হুমকি দেয়—যা এলাকাজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে।

সাংবাদিক মোঃ মাইদুল ইসলাম বলেন, “আমি কোনো চাঁদা দাবি করিনি বা কোনো বেআইনি কাজ করিনি। বরং যারা হাসপাতালে রোগীদের শোষণ করে, তাদের বিরুদ্ধে লিখেছি বলেই তারা এখন আমাকে টার্গেট করেছে। আমি প্রশাসনের কাছে ন্যায়বিচার ও সাংবাদিক নিরাপত্তা চাই।”

স্থানীয় সচেতন নাগরিকদের মতে, এই মানববন্ধন ছিল হাসপাতালের অনিয়ম-দুর্নীতি ঢাকতে একটি পরিকল্পিত নাটক। সিনিয়র সাংবাদিক বলেন, “মাইদুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে নির্ভয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কাজ করছেন। তার প্রতিবেদন অনেক প্রভাবশালী গোষ্ঠীকে অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে। এখন সেই গোষ্ঠী মিথ্যা ব্যানার টানিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে।”

মানববন্ধনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বহুজন মন্তব্য করেন যে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া অধিকাংশই হাসপাতালের প্রকৃত কর্মচারী নন; বরং দালালচক্রের সদস্য। এসব বিষয়ে আমিনুর, কুদ্দুছ , মাজহারুল আলম, বাধন, জাহাঙ্গীর আলম, আল আমিন, মিলন, হাফিজুর, রহিম, রিয়াদ, মনিরুজ্জামান, খোকন, আলাল, হিমেল, জবান, আক্তারুজ্জামান, সোহেল রানা, সুলতান, রিয়াদ, রিয়াজুল, নুরুজ্জামান, নজরুল, নাজমুল , জাকির, জিয়াউর , আশরাফুল, মিলন, আব্দুল্লাহ সহ আরো অনেকে মানববন্ধনকরীদের বিরুদ্ধে কমেন্ট করে প্রতিবাদ জানিয়েছে।

তারা জানান, “এরা সিন্ডিকেট করে হাসপাতাল চালাতে চায়। ঔষধ কোম্পানির দালাল হয়ে মানববন্ধন করে—এদের মানসিক হাসপাতালে পাঠানো উচিত।” “সত্য ও ন্যায়ের পথে থাকলে ভয় নেই; মিথ্যা অপপ্রচার কখনো সফল হবে না।”

“যেখানে অন্যায়-অবিচার, সেখানেই মাইদুল ভাইয়ের প্রতিবাদ। এমন সাহসী সাংবাদিকের প্রয়োজন সমাজে।”

“সত্যের পথে থাকলে শত্রু থাকবে। যারা আন্দোলন করছে, তাদের অনেকেই রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী দলের সঙ্গে যুক্ত।”
“মাইদুল ভাই, প্রমাণসহ ভিডিওগুলো স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও টিভি চ্যানেলে পাঠান—তাহলে দালালদের মুখোশ উন্মোচন হবে।”

সচেতন মহল দাবি করেছে, হাসপাতাল একটি চিকিৎসা সেবা প্রদানের জায়গা। এখানে সকল প্রকার মানুষ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক। সরকারি হাসপাতালের অনিয়ম, দুর্নীতি ও দালালচক্র নির্মূলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হোক। সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক, যাতে তারা নির্ভয়ে জনস্বার্থে কাজ করতে পারেন।

ভূরুঙ্গামারী হাসপাতালের এই ঘটনাটি প্রমাণ করে—অনিয়মের বিরুদ্ধে কলম ধরলে কত সহজেই মিথ্যা প্রচারণার শিকার হতে হয়। স্থানীয় সাংবাদিক সমাজ বলছে, এটি কেবল একজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র নয়, বরং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও জনগণের জানার অধিকারের ওপর সরাসরি আঘাত। প্রশাসনের উচিত দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করা এবং সত্যের পক্ষে কাজ করা সাংবাদিকদের পাশে দাঁড়ানো।